সমগ্র দেশের কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ পরিচালনা, তদারিক, নিয়ন্ত্রণ এবং উন্নয়নের দায়িত্ব যে প্রতিষ্ঠানের উপর তা বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড। পাশাপাশি পরীক্ষা ও মূল্যায়নের মাধ্যমে উত্তীর্ণদের সনদপত্রও প্রদান করে আসছে প্রতিষ্ঠানটি। ১৯৫৪ সালে প্রতিষ্ঠিত “ইস্ট পাকিস্তান বোর্ড অব এক্সামিনেশন ফর টেকনিক্যাল এডুকেশন” সময়ের পরিক্রমায় আজকের বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড (বাকাশিবো)।
বাকাশিবোর অধীনে নিম্ন মাধ্যমিক, মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক (ভোকেশনাল), ডিপ্লোমা কোর্স, বেসিক ট্রেড কোর্স, এডভান্স সার্টিফিকেট কোর্স সহ এনটিভিকিউএফ এর মাধ্যমে জাতীয় দক্ষতা সনদ প্রদান করে হয়ে থাকে। দক্ষ জনশক্তি বিনির্মাণে কারিগরি শিক্ষার গুরুত্ব অনস্বীকার্য।
চলতি বছর সনদ বাণিজ্যের ঘটনা সামনে আসলে বোর্ডের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব থেকে মো. আলী আকবর খানকে ওএসডি করা হয়। সনদ বাণিজ্যের ঘটনা সারাদেশে ব্যপকভাবে আলোচিত হয় এবং প্রশ্নবিদ্ধ হয় কারিগরি শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে। পরবর্তীতে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের আইসিটি পরিচালক প্রফেসর মো. মামুন উল হককে বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়। মো. মামুন উল হক বিসিএস জেনারেল এডুকেশন অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি।
এখন সময় এসেছে ভারমুক্ত করে একজন যোগ্য ব্যক্তিকে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেয়া। কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত, দুর্নীতিমুক্ত, স্বচ্ছ ব্যক্তিত্বের অধিকারী কেউ এই আসনে আসলে কারিগরি শিক্ষা ব্যবস্থার প্রতি নতুন করে আশার আলো সঞ্চার হতে পারে। বাংলাদেশ সরকার সব সময় কারিগরি শিক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে আসছে, স্বপ্ন দেখাচ্ছে নতুন প্রজন্মকে। কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে এমন একজন আসুক যিনি এসব বাস্তবায়নে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে পারবে। সনদ বাণিজ্যের মতো যেন কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা না ঘটে, দুর্নীতিমুক্ত এবং ভরসার জায়গা হোক কারিগরি শিক্ষা বোর্ড। শুধুমাত্র উচ্চতর ডিগ্রী নয়, কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাথে দীর্ঘদিন জড়িত ছিল এমন কোনো দক্ষ ও যোগ্য ব্যক্তি আসলে কর্মজীবনের বাস্তব অভিজ্ঞতা দিয়ে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনতে পারবে এমনটাই কাম্য। সবশেষ প্রত্যাশা, যোগ্য ব্যক্তির নেতৃত্বে কারিগরি শিক্ষা বোর্ড দেশের প্রকৃত জনশক্তি বিনির্মাণে ভূমিকা রাখুক।