ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা বাঞ্ছারামপুর উপজেলা ব্যবসায়ী মোঃ বাচ্চু মিয়াকে হত্যার দায়ে তার স্ত্রী রিনা বেগমকে যাবজ্জীবন ও পরকীয়া প্রেমিক রফিকুল ইসলামকে মৃত্যুদন্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ শারমিন নিগার এ রায় প্রদান করেন। আদেশ প্রদানকালে স্ত্রী রিনা বেগম উপস্থিত থাকলেও তার প্রেমিক রফিকুল ইসলাম পলাতক থাকায় তার বিরুদ্ধে জেল ওয়ারেন্ট ইস্যু করে আদালত। এছাড়াও রফিকুল ইসলামকে ৫০ হাজার টাকা ও রিনা বেগমকে ২০ হাজার টাকা অর্থদন্ড দেয়া হয়েছে।
২০১৯ সালের ৯ নভেম্বর নিখোঁজ হন বাচ্চু মিয়া। পরদিন ১০ নভেম্বর উপজেলার দড়িকান্দি ইউনিয়ন খল্লা গ্রামের একটি কলা বাগান থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। প্রথমে থানা পুলিশ ও পরে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) মামলার তদন্ত করে।
তদন্ত শেষে আদালতে দায়ের করা অভিযোগপত্রে (চার্জশিট) উল্লেখ করা হয়, বাঞ্ছারামপুর উপজেলার বড়াইল চর গ্রামের বাচ্চু মিয়া স্ত্রী, দুই মেয়ে ও এক ছেলেকে নিয়ে উপজেলার বিষ্ণুরামপুর এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকত। এ সময় বাচ্চু মিয়ার স্ত্রী রিনা বেগমের সাথে তার খালাতো বোনের জামাই একই উপজেলার বাড়াইলচর গ্রামের তুজু মিয়া মোল্লার ছেলে রফিকুল ইসলামের সাথে পরকীয়া প্রেমে জড়িয়ে পড়ে। হত্যাকান্ডের দু’সপ্তাহ আগে রফিকুল রিনা বেগমকে বিয়ের জন্য চাপ দেয়। এ সময় তারা মিলে বাচ্চু মিয়াকে হত্যার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী ঘটনার দিন রফিকুল বাচ্চু মিয়াকে মোটরসাইকেলে করে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরাফেরা করে একটি কলা বাগানে নিয়ে যায়। সেখানে মোটরসাইকেল থেকে নেমে বাচ্চুর গলায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে তাকে হত্যা করে। এ ঘটনায় নিহতের ভাই আলমগীর বাদী হয়ে মামলা করে। তবে গ্রামবাসী সন্দেহবশত রফিকুল ইসলাম ও রিনা বেগমকে আটক করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে। পরে এ হত্যাকান্ডের সাথে তারা জড়িত বলে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়।
এ বিষয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া কোর্ট পরিদর্শক মোঃ দিদারুল আলম জানান, যাবজ্জীবন দন্ডপ্রাপ্ত রিনা বেগমকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে এবং রফিকুল ইসলাম পলাতক থাকায় তার বিরুদ্ধে জেল ওয়ারেন্ট ইস্যু করা হয়।