স্বেচ্ছায় রক্ত দেওয়া লোকের নাম করে রোগীর কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ

📄🖋: মামুন রাফী, স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ১ সপ্তাহ আগে
আহমদিয়া ফিজিও থেরাফি এন্ড ডিজিটাল ল্যাবের মাকেটিং কর্মকর্তা আশিকুর রহমান

মমূর্ষ রোগীকে স্বেচ্ছায় রক্ত দেওয়ার জন্য এগিয়ে আসেন ডোনার। এজন্য নিয়ে যাওয়া হয় নির্দিষ্ট ডায়াগনস্টিক ল্যাবে। পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে ডোনারের কাছ থেকে নিয়ে রোগীকে দেওয়া হয় ব্যাগ ভর্তী রক্ত। রক্ত দিয়ে ডোনার চলে যাওয়ার পর পাল্টে যায় চিত্র। স্বেচ্ছায় দেওয়া রক্তের জন্য রোগীর স্বজনদের কাছ থেকে নেওয়া হয় টাকা। ডোনারকে না জানিয়ে দীর্ঘদিন থেকে অনৈতিক কাজটি করে আসছেন একটি ডায়াগনস্টিক ল্যাবের মার্কেটিং কর্মকর্তা।

অভিযুক্ত এই কর্মকর্তা হলেন নোয়াখালী হাতিয়ার আহমদিয়া ফিজিও থেরাফি এন্ড ডিজিটাল ল্যাবের মার্কেটিং কর্মকর্তা আশিকুর রহমান। তিনি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন দ্বীপ ব্লাড ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন। অনৈতিক এসব কাজে জড়িত থাকার অভিযোগে সংগঠনটি তাকে বহিস্কার করে।

জানা যায়, অসামাজিক কর্মকান্ড ডোনাররের নামকরে রোগির লোক থেকে টাকা আদায় সহ নানান অভিযোগ উঠেছে দ্বীপ ব্লাড ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও আহমদিয়া ফিজিও থেরাফি এন্ড ডিজিটাল ল্যাবের মার্কেটিং আশিকুর রহমানের বিরুদ্ধে। তার অমানবিক নির্যাতনের শিকার নোয়াখালী দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার গরীব অসহায় রোগী এবং তাদের স্বজনরা। ডোনারের নাম করে রোগির পরিবার থেকে অর্থ আদায়, ব্লাড সংগঠনের টাকা আত্মসাদ, রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার, রোগির সাথে কোন মেয়ে থাকলে তাদের নাম্বার নিয়ে কথা বলা এবং অনৈতিক প্রস্তাব দেওয়া, রোগির মতের বিরুদ্ধে তার কমিশনের জন্য সে যেই প্রতিষ্ঠানে চাকুরি করে সেখানে নিয়ে যাওয়া সহ অকে অভিযোগ রয়েছে এই মানবিক মুখোশধারী আশিকুর রহমানের বিরুদ্ধে। এসকল অনিয়মের কারণে তাকে ব্লাড সংগঠন থেকে বহিস্কার করা হয়।

এক রোগির স্বজন জানান, আমাদের রোগি প্রাইভেট হাসপাতালে ভর্তি ছিলো, ডেলিভারীর আগে ডাক্তার দুই ব্যাগ ব্লাড দিতে বলেন, তখন আমরা কয়েকজনের সাথে ব্লাডের বিষয়ে যোগাযোগ করি, তার মধ্যে আশিককে আমাদের একজন কল দেয়, কিছুক্ষন পর আশিক বলে ব্লাড ব্যাবস্থা হয়েছে আপনারা আহমদিয়া ফিজিও থেরাফি এন্ড ডিজিটাল ল্যাবে আসেন, তখন আমি বললাম আমাদের রোগিতো সেখানে নেওয়া সম্ভবনা আপনারা এখানে আসেন, সে বলে এখানে না আসলে ব্লাড দেওয়া সম্ভব না আপনারা গাড়ি ভাড়া দিয়ে দেন, পরে সে প্রাইভেট হাসপালে এসে আমাদের থেকে গাড়িভাড়া নিয়ে যায়।

অন্য এক রোগির স্বজন জানান, আশিক মানবিকতার নামে রোগিদের উপর জুলুম করে। আমার বোনকে একজন ডোনার ব্লাড দিয়েছে, আমি ডোনারকে যতটুকু সম্ভব আপ্যায়ন করেছি, ডোনার আমাদের থেকে বিদায় নেওয়ার কিছুক্ষন পর আশিক এসে আমাকে বলে ডোনার জাহাজমারা থেকে এসেছে তার খাওয়া এবং গাড়ি ভাড়ার জন্য এক হাজার টাকা দেন, আমি কিছু না বলে টাকাটা দিয়ে দিই, আমি ডোনারকে ব্যাক্তিগত ভাবে ছিনি তার বাড়ি ওছখালীতে। শুধু আমি না বহু বহু জন থেকে ডোনারের নাম করে তাদের কাছ থেকে সে টাকা নিয়েছে। যাদের সামর্থ আছে তাদের না হয় কষ্ট হবেনা কিন্তু অনেক গরীব মানুষ থেকে ও সে টাকা নিয়েছে।

আশিকুর রহমানের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, এসকল অভিযোগ মিথ্যা। আমি ব্লাড নিয়ে কাজ করি এটাই অনেকের জন্য সমস্যা। তাছাড়া আমাকে বহিস্কার করবে কে আমি সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা। আমি কোন রোগির স্বজন থেকে কখনো টাকা পয়সা গ্রহণ করিনি।

দ্বীপ ব্লাড ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা মো: সুমন উদ্দিন জানান, আশিকুর রহমানের বিরুদ্ধে অনেক গুলো অভিযোগ এসেছে। এ বিষয়ে আমরা তাকে সতর্ক করে কারণ দর্শানোর নোটিশও দিয়েছি কিন্তু সে কোন সদুত্তর দেয়নি। তাকে আমরা শোধরানোর সুযোগ দেওয়ার পরেও পরিবর্তন না আসায় দ্বীপ ব্লাড ফাউন্ডেশনের অন্যান্য প্রতিষ্ঠাতা সদস্য এবং উপদেষ্টারা তাকে সংগঠন থেকে বহিস্কার করেন। সে সংগঠনের নাম ভাঙ্গিয়ে কোন অনিয়ম করলে তার দায়ভার দ্বীপ ব্লাড ফাউন্ডেশন নেবেনা।

আহমদিয়া ফিজিও থেরাফি এন্ড ডিজিটাল ল্যাবের মালিক ওমর ফারুক রিয়াজ বলেন, সে যদি কোন রোগির লোক থেকে টাকা পয়সা নিয়ে থাকে তা অনেক বড় অপরাধ। যদি কোন প্রমান থাকে তাহলে তাকে আমার প্রতিষ্ঠান থেকে বাদ দিয়ে দেব। কেউ যদি তাকে খুশি হয়ে টাকা দেয় সেটা ভিন্ন বিষয়। বর্তমানে আমার প্রতিষ্ঠানে ব্লাড ব্যাগ কালেকশন করিনা আগে যদিও করা হতো।

  • হাতিয়া