যুগের পর যুগ জাতীয় গ্রীডের বিদ্যুৎ থেকে বঞ্চিত থাকার পর গত বছর থেকে ১৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন একটি প্রকল্পের মাধ্যমে হাতিয়া-নিঝুমদ্বীপকে আলোকিত করা হয়। কিন্তু প্রকল্পটি বিঘ্নিত করতে প্রভাব বিস্তার করে বিভিন্ন এলাকায় অভিনব কৌশলে চলছে বিদ্যুৎ চুরির মহোৎসব। এমনই এক বিদ্যুৎ চুরির প্রমাণ মিলেছে ছাত্রলীগ নেতা ও ইউপি সদস্যের ভাই জাবের উদ্দিনের।
গত কাল উপজেলার তমরদ্দি ইউনিয়নের বেকের বাজার সংলগ্ন এলাকার ছাত্রলীগ নেতার বাড়ী এবং তার ভাইয়ের অটোরিক্সার গ্যারেজে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা অভিযান পরিচালনা করে। এ সময় বিপুল পরিমাণ বৈদ্যুতিক তার ও প্রি-পেমেন্ট মিটার জব্দ করা হয়।
অভিযুক্ত জাবের উদ্দিন উপজেলার তমরদ্দি ইউনিয়নের মো: সিরাজুল ইসলামের ছেলে। সে তমরদ্দি ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুদ্দিন তপু এবং ৭নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি ও ইউপি সদস্য সালেহ উদ্দিনের ভাই। তার বিরুদ্ধে প্রায় ৭ লাখ টাকা রাজস্ব ক্ষতিসাধনের মামলা প্রক্রিয়াধীন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি জানান, ছাত্রলীগের সভাপতি তফু এবং তার ভাইয়েরা দলীয় প্রভাব বিস্তার করে এলাকায় অনেক অন্যায় অবিচার করেছে। তার সুবাধে দীর্ঘ সময় ধরে তারা বিদ্যুতের চোরাই লাইন ব্যবহার করছে। ভরে কেউ কিছু বলতে পারেনি। চোরচক্রের সাথে বিদ্যুৎ বিভাগেরই কিছু কর্মকর্তা ও কর্মচারী সরাসরি জড়িত রয়েছে। হাতিয়ার দুর্নীতিবাজদের কারণে সরকার লাখ লাখ টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। যারাই বিদ্যুৎ চুরির অনিয়মের সাথে জড়িত তাদের দ্রæত শনাক্ত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানান তারা।
উপসহকারী প্রকৌশলী মো: গোলাম মোস্তফা জানান, তমরদ্দি এলাকার জাবের নামে এক ব্যক্তি তার গ্যারেজ এবং বাড়ির বসত ঘরে ৪টি প্রি-পেমেন্ট মিটার ব্যবহার করতো। কিন্তু সে প্রায় একবছর যাবৎ মিটারের ইনকামিং থেকে বাইপাস করে সে অটো গ্যারেজ এবং ঘরের বিভিন্ন বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার করছে। আমরা গোপন তথ্যের ভিত্তিতে একটি অভিযান পরিচালনা কারি। অভিযানে ঘটনার সত্যতা মিলেছে। পরে সেখান থেকে বিপুল পরিমাণ বৈদ্যুতিক তার ও প্রি-পেমেন্ট মিটার জব্দ করা হয়। তার বিরুদ্ধে বিদ্যুৎ আইন ২০১৮ এর ৩২ ও ৩৮ ধারা মতে আনুমানিক ৬ লাখ ৯৪ হাজার একশত পনের টাকা রাজস্ব ক্ষতিসাধনের মামলা প্রক্রিয়াধীন।
বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিউবো) হাতিয়ার নির্বাহী প্রকৌশলী মশিউর রহমান বলেন, হাতিয়ায় অভিনব কৌশলে চলছে বিদ্যুৎ চুরির মহোৎসব। আমরা এসকল দূষ্কৃতীকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রেখেছি। ইতমধ্যে অনেকগুলো জায়গায় অভিযান পরিচালনা করে সার্ভিস ক্যাবল এবং মিটার জব্দ করা হয়েছে। সকল অপরাধীদের বিরুদ্ধে রাজস্ব ক্ষতিসাধনের মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। আমাদের অফিসের কারো যদি সম্প্রিক্ততা পাওয়া যায় তাদের বিরুদ্ধেও ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে।