নিঝুম দ্বীপে বেড়াতে এসে এক যুবক ও যুবতী হেনস্তার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। নিঝুম দ্বীপে বেড়ানো ও ছবি তোলা শেষ করে গন্তব্য চলে আসার পথে যুবদলের কর্মীরা পথ রোধ করে কু-প্রস্তাব, অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ সহ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে হাতিয়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা।
জানা যায় গত ২০ নভেম্বর ২০২৪ মঙ্গলবার সকালে নিঝুমদ্বীপে ছবি তোলার উদ্দেশ্যে রওয়ানা করেন ভুক্তভোগীরা । ছবি তোলা শেষ করে পুনরায় চলে আসার সময় যুবদল নেতা সোহেল, এনায়েত হোসেন, শাহারাজ উদ্দিন, আশ্রাফ উদ্দিন, আরিফ উদ্দিন, আলতাফ হোসেন, ইলিয়াছ, আরিফ উদ্দিন, রুবেল উদ্দিন, জিহাদ উদ্দিন, তুহিন, মনির উদ্দিন এরা সবাই ভুক্তভোগীর গতিপথ রোধ করে অশ্লীল কথা বার্তা বলে, ভুক্তভোগী তাদের কথায় প্রতিবাদ করলে সকলে অন্যায় ও বেআইনীভাবে আগাইয়া আসে। সোহেল, এনায়েত, আশ্রাফ, রুবেল উদ্দিন তাকে কিল, ঘুষি, লাথি মারিয়া বেদনাদায়ক জখম করে এবং তার নিকট থাকা সনি A-73 ক্যামেরা, ব্যবহৃত মোবাইল সেট OPPO-A16 এবং মানি ব্যাগে থাকা ৮ হাজার টাকা সহ মানি ব্যাগ নিয়া যায়।
এক পর্যায়ে তারা ভুক্তভোগীর পাশে থাকা যুবতীকে নির্জন বাগানের দিকে নিয়া যাওয়ার জন্য টানা হেছড়া শুরু করে এর পর তারা আত্মরক্ষার জন্য চিল্লা চিল্লি করলে তারা থেমে যায়। তারপর সোহেল, এনায়েত, আশ্রাফ, রুবেল উদ্দিনের নিকট থাকা তার ক্যামেরা, মোবাইল সেট ও টাকা ফেরত চাইলে তারা তার নিকট ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবী করে। তাতে ভুক্তভোগী বাধ্য হয়ে বিকাশের মাধ্যমে টাকা নিয়ে ১৫ হাজার টাকা চাঁদা দিয়া মোবাইল, ক্যামেরা এবং তারা নিয়া ঘাটের উদ্দেশ্যে রওয়ানা করেন। তাদের এই কার্যকলাপে শারীরিক হেনস্তা ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেন তারা। জানা যায় ভুক্তভোগী হাতিয়া সুপার মার্কেটে হাতিয়া ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট নামীয় দোকানের মালিক এবং একজন ফটোগ্রাফার।
১৫ হাজার টাকা বিকাশে নেওয়া আজমির বলেন, আমাকে বিকাশে টাকা দেওয়া হয়েছে, আমি সেটা সোহেলকে দিয়েছি। তারপর টাকা গুলো কি করছে আমি জানি না।
এই বিষয়ে যুবদল নেতা সোহেল অস্বীকার করে বলেন, আমরা ইভটিজিং করিনি বরং ওদেকে ইভটিজিং এর থেকে বাঁচিয়েছি। একটা ছেলে আরেকটা মেয়ের সাথে কেন ঘুরতে আসবে, যদি খারাপ কিছু হয় তাহলে তো দায়ী আমরা থাকবো তাই ওই মেয়েকে আমরা নিজ দায়িত্বে তার বাবার কাছে পৌঁছায় দিয়েছি। ১৫ হাজার টাকা চাঁদা দাবীর বিষয়টিও তিনি অস্বীকার করেন।
এই বিষয়ে যুবদল নেতা এনায়েত বলেন, আমি ঘটনা জেনেছি, পরে শুনেছিও যে বিষয়টা ১৫ হাজার টাকার মধ্যে মিমাংসা করছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন যেই ১৫ হাজার টাকা নেওয়া হয়েছে সেই ১৫ হাজার টাকা নেতারা কর্মীরা ৫০০- ১০০০ করে খরচ করেছে।
এই বিষয়ে নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি আশ্রাফ বলেন, আমি এসব বিষয়ে কিছু জানি না, এমন কোন ঘাটনা ঘটে নাই নিঝুম দ্বীপে আর আমার বিরুদ্ধে যা বলেছে সবই মিথ্যা।
নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়নের অথরাইজ চেয়ারম্যান লাভলী বেগম বলেন, আমাকে ফোন করে বলেছে দুজন লোককে দরছে, এবং ১৫ হাজার টাকার মধ্যে মিমাংসা করেছে, তবে কারা করছে সে বিষয়ে কিছু বলতে চাই না।
থানায় অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে হাতিয়া থানার ওসি ( ভারপ্রাপ্ত) মনিরুজ্জামান বলেন, অভিযোগ এসেছে, এবং অভিযোগ পত্র নিঝুম দ্বীপ পুলিশ ফাঁড়ির এসআই মুজাম্মেলকে প্রেরন করা হয়েছে। আমরা সঠিক তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নিব।