হাতিয়া বিএনপি নেতারা চাঁদাবাজি করেছে দাবি করা ইউটিউবারকে সংবর্ধনা দিলো বিএনপি নেতা

📄🖋: মামুন রাফী, স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ২ দিন আগে
হাতিয়া বিএনপি নেতারা চাঁদাবাজি করেছে দাবি করা ইউটিউবারকে সংবর্ধনা দিলো বিএনপি

৫ আগস্টের পর নোয়াখালীর হাতিয়ায় ১৬ কোটি টাকা চাঁদাবাজি হয়েছে দাবি করা ইউটিউবারকে সংবর্ধনা দিয়েছেন সোনাদিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মান্নান। ১৮ নভেম্বর বিকেলে উপজেলার চরচেঙ্গা বাজারে এ ঘটনা ঘটে।

ওই ইউটিউবারের দাবি প্রথম ২০ দিনেই বিএনপিই এই অর্থ চাঁদাবাজি করেছে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনা সৃষ্টি হয়েছে। ওই ইউটিউবারের নাম বনি আমিন। সম্প্রতি তিনি হাতিয়ায় ঘুরতে আসেন। যদিও চরচেঙ্গা বাজার বণিক সমিতির নামে এই সংবর্ধনা দেয়া হয়। আব্দুল মান্নান বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক।

জানা গেছে, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ ঘুরে নারী ও ভ্রমণ সংক্রান্ত নানা বিষয়ে ফেসবুক ও ইউটিউবের মাধ্যমে প্রচার করেন বনি আমিন। তার বিরুদ্ধে ব্লগে নারীদেরকে বিকৃত ও কুরুচিপূর্ণভাবে উপস্থাপন করার অভিযোগ রয়েছে। তবে তার জন্ম দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ায়। বর্তমানে তিনি অস্ট্রেলিয়ায় থাকেন।

গত ৫ আগস্ট স্বৈরাচার হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর ১ সেপ্টেম্বর এই ইউটিউবার তার ফেসবুক একাউন্টে পোস্টের মাধ্যমে লিখেন, ‘কীসের স্বাধীনতা! দেশ এক লুটেরা থেকে আরেক বুভুক্ষ লুটেরার কাছে যাচ্ছে। গত ২০ দিনে শুধু হাতিয়া দ্বীপেই বিএনপি ১৬ কোটি টাকা চাঁদাবাজি করেছে। জামায়াত ইসলামই একমাত্র নির্ভরশীল দল।’

তার এই পোস্টে ৩২ হাজার লাইক ৫ হাজার ২০০ কমেন্ট ও ৩ হাজার ১০০ মানুষ শেয়ার করেন। এ নিয়ে দেশ জুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হলে বিএনপির কোনও নেতাকে প্রতিবাদ করতে দেখা যায়নি। তবে স্থানীয়দের দাবি তখন বিপুল পরিমাণ চাঁদাবাজি হয়ে ছিলো দ্বীপ হাতিয়াতে। আর বিএনপির এসব নেতারাই এই চাঁদাবাজি করেছেন।

এর আগেও বনি আমিন হাতিয়া দ্বীপ নিয়ে বেশ কয়েকটি পোস্ট করেন। সেসব পোস্টে তিনি স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের এমপি হাতিয়া দ্বীপের সাবেক সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আলীকে একজন সৎ ও ভালো মানুষ হিসেবে উল্লেখ করেন। হাতিয়া দ্বীপের উন্নয়নে মোহাম্মদ আলীর পরিবারকে দরকার বলে তিনি মনে করেন তিনি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সোনাদিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মান্নান বলেন, এটা আসলে রাজনৈতিক ভাবে হয়নি। ওনার শৈশবের অনেক সময় কাটিয়েছেন আমাদের বাজারে এবং সে একজন আলোচিত কনটেন্ট ক্রিয়েটর এবং সেলিব্রেটি ও বলা যায়।

সে এক সময় আওয়ামী লীগ করতো, এবং পরে দেখি সে আওয়ামী লীগ বিদ্বেষী, আবার পরে দেখি বিএনপি বিদ্বেষী সব সময়। এখন তিনি আমাদের এলাকায় জন্মেছেন বলেই আমরা এটা করেছি। এখানে রাজনৈতিক বিবেচনায় হয়নি।

বিএনপি ১৬ কোটি টাকা চাঁদাবাজির বিষয়ে প্রশ্ন করলেও তিনি সেটার কোন জবাব দেননি।

এসব বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বিএনপির সিনিয়র নেতা বলেন, বনি আমিন একজন আওয়ামী লীগ নেতা। সোনাদিয়া ইউনিয়নে তার জন্ম এটা আমিও জানতাম না কখনো। তবে সে যেই হোক না কেন আমরা এখন দলীয় ভাবে বিবেচনা করি। তাই তাকে নিয়ে দলীয় নেতাদের এতো তোষামোদ ও সংবর্ধনা দেওয়ার তো প্রয়োজন নেই। তিনি যদি দাবি করে থাকেন বিএনপি নেতারা চাঁদাবাজি করেছেন, তাহলে তাদের উচিত ছিলো তার ব্যাখ্যা জানতে চাওয়া। সেটা না করে উল্টো সংবর্ধনা কীভাবে দিলো সেটা আমরা দলীয়ভাব খতিয়ে দেখবো।

  • বনি আমিন
  • হাতিয়া