চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলায় পালাখাল রোস্তম আলী ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থীরা বই খুলে এইচএসসি পরীক্ষার দেওয়ার অভিযোগে দায়িত্বরত দুই কেন্দ্র সচিবসহ পাঁচজনকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
তাঁরা হলেন, পালাখাল রোস্তম আলী ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক মো. আবুল বাশার ও নিন্দুপুর মহীউদ্দীন খান আলমগীর স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো. হাবিবুর রহমান।
গতকাল সোমবার কচুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) চিঠির আলোকে এই ব্যবস্থা নেয় কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক। রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেন ইউএনও।
এ ছাড়া একই অভিযোগে চাঁদপুর জেলা প্রশাসকের নির্দেশে ওই কেন্দ্রের ট্যাগ অফিসার সোহেল রানাসহ দায়িত্বরত দুই শিক্ষককেও প্রত্যাহার করা হয়। তবে এ ঘটনায় শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
জানা গেছে, এবারের এইচএসসির বাংলা দ্বিতীয়পত্র পরীক্ষার দিন কচুয়ার সাবেক সাংসদের নামে প্রতিষ্ঠিত নিন্দুপুর মহীউদ্দীন খান আলমগীর স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রের একটি কক্ষে পরীক্ষার্থীরা কেউ বই খুলে, কেউবা বাহিরে থেকে উত্তরপত্র সংগ্রহ করে, আবার কেউ একজন অন্যজনের খাতা দেখে পরীক্ষা দেয়। এ ধরনের কার্যক্রমের ভিডিও গোপনে ধারন করে ওই কেন্দ্রে এক ব্যক্তি। ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি প্রশাসনের নজরে আসে।
ওই দিন ওই কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত সরকারি ট্যাগ অফিসার হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন কচুয়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সোহেল রানা। অভিযোগ উঠেছে, তাঁর উপস্থিতিতে ওই দিনসহ প্রতিদিনই এভাবে ওপেন বই দেখে শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিয়ে আসছে। প্রতিদিন এই সুযোগ পেতে কেন্দ্র সচিব ও ট্যাগ অফিসারকে মোটা অঙ্কের টাকা প্রদান করা হতো। জয়কলি বিষয়টি নিয়ে ওই এলাকার অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
রুস্তম আলী কলেজের অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম বলেন, ‘কোন কক্ষে কী হয়েছে, সেটা আমি বলতে পারছি না। তবে এ ঘটনায় প্রশাসন দুই কেন্দ্রের সচিবকে পরিবর্তন করে ভারপ্রাপ্ত সচিব হিসেবে নতুন দুজনকে দায়িত্ব দিয়েছে। তাঁরা হলেন, পালাখাল রোস্তম আলী ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক বিল্লাল হোসেন ও নিন্দুপুর মহীউদ্দীন খান আলমগীর স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রভাষক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান।’
ওই এলাকার বাসিন্দা ইকবাল আজিজ বলেন, এভাবে একটি প্রতিষ্ঠানের ছেলে-মেয়েদের নকলের সুযোগ করে দিয়ে অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের ক্ষতি করা হচ্ছে।’
কচুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এহসান মুরাদ বলেন, এ বিষয়ে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তদন্ত করা হচ্ছে। কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ড থেকেও একটি তদন্ত টিম আসবে।