দলীয় প্রভাব বিস্তার করে বিভিন্ন সময়ে দুর্নীতি অভিযোগ, মাদ্রাসায় রাজনীতি করতে ছাত্রদের বাদ্য করা, মাদ্রাসা ফান্ডের টাকা এবং অতিরিক্ত টাকা আদায় সহ বিভিন্ন ধরনের অভিযোগ
নোয়াখালী জেলা হাতিয়া উপজেলার বুড়িরচর ইউনিয়নের বুড়িরচর আহমদিয়া আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সুলতান আহমদ, হাতিয়া রহমানিয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষ জিয়ারুল ইসলাম এবং জাহাজমারা সিরাজুল উলুম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ হাফেজ আবুল কাশেম এর বিরুদ্ধে। এই তিন প্রধান শিক্ষক এর পদ ত্যাগের দাবি নিয়ে ক্লাস ছেড়ে বিক্ষোভ করছে ছাত্র ছাত্রীরা, তাদের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের উপর ক্ষুব্দ হয়েছেন প্রতিষ্ঠানের সকল শিক্ষক বৃন্দ ও।
জানা যায় দলীয় প্রভাব খাটিয়ে উক্ত মাদ্রাসায় নিয়োগ লাভ, নিয়োগ বানিজ্য, শিক্ষকদের এমপিও ভুক্তি ও উচ্চতর স্কেলের জন্য মোটা অংকের কমিশন আদায়, ভিন্ন মতালম্বীদের উপর নির্যাতন, নিয়োগ বানিজ্য, দলীয় শিক্ষকদের টাকার বিনিময়ে বিভিন্ন প্রশিক্ষনে প্রেরণ, মাদ্রাসার টাকা আত্মসাৎ সহ নানাবিধ অনিয়মের সাথে জড়িত। ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন সময়ে হাতিয়ার জামাত-শিবির কর্মী ও তাদের অভিভাবকদের গ্রেফতারের বিষয়ে সাবেক এমপি মোহাম্মদ আলীর বাসায় জোরালো ভূমিকা নিয়ে বক্তব্য রাখেন এবং এমপি মোহাম্মদ আলীকে পরামর্শ দেয় যে অতিদ্রুত যেন তাদেরকে গ্রেফতার করে। ছাত্র আন্দোলনের ব্যাপারে তার বক্তব্য ছিল, “ঢাকাতে যে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করছে তারা সবাই নষ্ট ও নেশাখোর”।
প্রতিটি মাদ্রাসার সমন্বয়কারীরা জানান- নোয়াখালী ৬ আসনের সাবেক এমপি মোহাম্মদ আলী সাথে হাত করে মাদ্রাসা বিভিন্ন মেগা প্রজেক্টের টাকা আত্মসাৎ, মাদ্রাসা ফান্ডের টাকা, ছাত্র ছাত্রীদের মানসিক ভাবে টর্চারিং সহ বিভিন্ন অপকর্মে লিপ্ত এই অধ্যক্ষ সুলতান আহমেদ, জিয়ারুল ইসলাম, হাফেজ আবুল কাশেম, আমরা তাদেরকে আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চাই না, আমরা তাদের পদ ত্যাগ চাই এবং করতে হবে।
শিক্ষার্থীরা জানানঃ আমরা বুড়িরচর আহমদিয়া আলিম মাদ্রাসার সাধারণ শিক্ষার্থীরা দীর্ঘ এক মাসের বেশি সময় যাবত সুলতান এর পদত্যাগে আন্দোলন করে আসতেছি। আমরা লিখিত আকারে অফিস এবং কমিটির বিভিন্ন মুরুব্বী কে উপস্থাপন করেছি। আমাদের দাবিগুলোর পরিপ্রেক্ষিতে এখন পর্যন্ত আমরা কোন জবাব পাইনি। বর্তমানে শুনতেছি মাদ্রাসার অডিটের নাম দিয়ে অধ্যক্ষ সুলতান আসবেন। আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা এটি কোনভাবে মেনে নিবো না। প্রিন্সিপাল আসতে হলে আমাদের দাবিগুলো মেনে নিতে হবে এবং লিখিত আকারে আমাদের দাবি মানার ব্যাপারে নোটিশ দিতে হবে। এর ব্যতীত কোন দুষ্কৃতির মাধ্যমে প্রিন্সিপাল মাদ্রাসায় প্রবেশ করার চেষ্টা করলে যেকোনো পরিস্থিতির জন্য শিক্ষার্থীরা দায়ী থাকবে না। আমাদের যৌক্তিক দাবিগুলো লিখিত আকার আগামীকালের মধ্যে মেনে নিতে হবে। এবং যে দাবিগুলোর জন্য অডিট প্রয়োজন তার জন্য নিরপেক্ষ অডিট কমিটি গঠন করতে হবে। নিরপেক্ষ অডিট কমিটির মাধ্যমে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অডিট সম্পন্ন করে আমাদের দাবিগুলো পূরণ করতে হবে।
সম্প্রতি পদত্যাগের বিষয়ে হাতিয়া রাহমানিয়া মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক জিয়ারুল ইসলামের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলনও করেন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা, তারা বলেন দলীয় প্রভাব বিস্তার করে বিভিন্ন অপকর্ম ও দুর্নীতি অনিয়ম সরকারি অর্থ আত্মসাৎ, নারী কেলেঙ্কারি সহ বিভিন্ন ধরনের অভিযোগ তার বিরুদ্ধে তাই আমরা অতিদ্রুত তাদের পদত্যাগ চাই।
জাহাজমারা সেরাজুল উলুম মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক আবুল কাশেমের বিরুদ্ধে ও একই ধরনের অভিযোগ রয়েছে। জানা যায় হাফেজ আবুল কালাম ১৫ লক্ষ টাকা ঘুষ দিয়ে প্রধান শিক্ষকের চেয়ারে বসে। তার পর থেকে অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে শিক্ষার্থী শিক্ষক সবাই চাচ্ছেন পদত্যাগ।
এই বিষয়ে প্রতিটি মাদ্রাসার শিক্ষকরা জানানঃ ছাত্র ছাত্রীরা তাদের ভালোটা বুঝতে পারছে, এবং এটা তাদের যৌক্তিক দাবি, এদের অনিয়ম ও দুর্নীতি এমন পর্যায়ে পৌঁছে গেছে যে শিক্ষার্থীরাই তাদের পদত্যাগ চাচ্ছে। তাহলে আপনারা নিজেরাই বুঝতে পারছেন শিক্ষার্থীরা তাদের উপর কতটা ক্ষুব্ধ।
এই বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ও সহকারী কমিশনার ভূমি মিল্টন চাকমা বলেনঃ যেসব প্রধান শিক্ষক দুর্নীতি ও অনিয়মের সাথে জড়িত আমরা সঠিক তদন্ত করে, আইনি ব্যবস্থা নিব।