পরকালে মুক্তি লাভের জন্য বিশেষ তিনটি কাজ

📄🖋: রুবিনা আক্তার
প্রকাশ: ৩ সপ্তাহ আগে

আল্লাহ তাআলা কোরআনের বিভিন্ন স্থানে বান্দাদের জন্য জান্নাত লাভের সহজ পথ নির্দেশ করেছেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) বিভিন্ন হাদিসে জান্নাতে প্রবেশের এবং জাহান্নাম থেকে মুক্তির উপায় বর্ণনা করেছেন। এক. হাদিসে উকবা বিন আমির (রা.) বলেন, আমি জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহর রাসুল! মুক্তির উপায় কী? রাসুলুল্লাহ (সা.) জবাব দিলেন, ‘তুমি তোমার জবানকে নিয়ন্ত্রণে রাখো, তোমার ঘর যেন তোমার জন্য প্রশস্ত হয় এবং নিজের গুনাহের জন্য কাঁদো।’ (জামে তিরমিজি, হাদিস : ২৪০৬)

হাদিসে তিনটি কাজকে মুক্তির উপায় বলা হয়েছে—

জবানের নিয়ন্ত্রণ:

জবানই মানুষকে জাহান্নামে নিয়ে যায়। কত রকম গুনাহই না এই জবান দ্বারা করা হয়। মিথ্যা বলা হয়, গিবত করা হয়, অন্যের মনে কষ্ট দেওয়া হয়, গালি দেওয়া হয়, অশ্লীল কথা বলা হয়, আরও কত কিছু! এসব গুনাহের কারণে অগণিত লোক জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হবে। আর যে ব্যক্তি জবানের নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে, তার জন্য রয়েছে বিরাট পুরস্কার। রাসুলুল্লাহ (সা.) তার জন্য জান্নাতের দায়িত্ব নিয়েছেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি তার দুই ঠোঁটের মাঝখানের বস্তু (জিহ্বা) ও দুই পায়ের মাঝখানের বস্তুর (লজ্জাস্থানের) জামিন হতে পারবে (অপব্যবহার হতে সংযত রাখবে), আমি তার জন্য জান্নাতের জামিন হবো।’ (জামে তিরমিজি, হাদিস : ২৪০৮)

প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে না যাওয়া:

নিজের ঘর যেন বিচারের জন্য যথেষ্ট হয়। বেশি সময় ঘরের বাইরে কাটানো উচিত নয়। অযথা কাজে এখানে-সেখানে না যাওয়া উচিত।

বাইরে অতিরিক্ত সময় কাটালে বিভিন্ন ফিতনা ও গুনাহে জড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা থাকে। বর্তমান সময় ফিতনার সময়, তাই নিজের ঈমান ও আমল রক্ষার জন্য ঘরের বাইরে অতিরিক্ত সময় কাটানো উচিত নয়।

নিজের গুনাহের জন্য কাঁদা:

অন্যের পাপ নিয়ে আলোচনা না করে নিজের পাপের দিকে নজর দেওয়া উচিত। অতীতের কৃত পাপের জন্য অনুতপ্ত হওয়া অত্যন্ত জরুরি। তাই আল্লাহর কাছে বেশি বেশি কান্না করা উচিত। যে চোখ আল্লাহর ভয়ে কাঁদে, তার জন্য জাহান্নাম হারাম হয়ে যায়। অশ্রুসিক্ত চোখকে জাহান্নাম স্পর্শ করবে না। ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে বলতে শুনেছি, জাহান্নামের আগুন দুটি চোখকে স্পর্শ করবে না—১. মহান আল্লাহর ভয়ে যে চোখ কাঁদে। ২. আল্লাহ তাআলার রাস্তায় যে চোখ (নিরাপত্তার জন্য) পাহারা দিয়ে নির্ঘুম রাত কাটায়। (তিরমিজি, হাদিস : ১৬৩৯).

মহান রাব্বুল আলামিন আমাদের সকলকে হেদায়েত দান করুন এবং গুনাহ থেকে বিরত থাকার তৌফিক দান করুন। আমীন।

  • ইসলামী জীবন
  • ইসলামের আলো