মিথ্যাচারীদের জন্য আল্লাহ পথপ্রদর্শন করেন না

📄🖋: রুবিনা আক্তার
প্রকাশ: ২ সপ্তাহ আগে
মিথ্যাচারীদের জন্য আল্লাহ পথপ্রদর্শন করেন না

যদি কোনো ব্যক্তি সত্য উদঘাটনে সন্দেহে পড়ে, তবে সে যদি প্রবৃত্তির অনুসরণ বাদ দিয়ে আল্লাহর কাছে নিজের সত্যতার পরিচয় দিয়ে তা অনুসন্ধান করে, তাহলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সে সঠিক সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারে এবং সত্য খুঁজে পায়। কিন্তু যদি তাও ব্যর্থ হয়, তবে আল্লাহ তাকে ক্ষমা করবেন। সত্যের বিপরীত হচ্ছে মিথ্যা। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, নিশ্চয় আল্লাহ সীমা লঙ্ঘনকারী মিথ্যাচারীকে পথ প্রদর্শন করেন না (সুরা মুমিন-২৮)।

মিথ্যার প্রথম উদ্ভব অন্তরে ঘটে, তারপর তা ভাষায় প্রকাশিত হয় এবং শারীরিক কর্মে তার প্রতিফলন ঘটে। এর ফলে মিথ্যার প্রভাবে তার জবান, অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের কাজ এবং অবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তখন মিথ্যাচার তার জীবনের অংশ হয়ে যায়। মুমিন হতে হলে আল্লাহ এবং রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি নিঃশর্ত ভালোবাসায় আবদ্ধ হতে হবে।

আল্লাহর প্রতি ভালোবাসা তার জাগতিক জীবনের সবকিছু নির্ধারণ করবে। আল্লাহর প্রতি নিঃশর্ত ভালোবাসার কারণে সে রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে ভালোবাসবে। রসুলের নির্দেশিত পথে আল্লাহকে চেনা যায় এবং আল্লাহর দেওয়া দীনে আবদ্ধ থাকা যায়, তাই তার প্রতি নিখাদ আনুগত্য থাকতে হবে। ইমানদার হওয়ার জন্য আল্লাহ এবং রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি নিঃশর্ত ভালোবাসার প্রকাশ অপরিহার্য।

এ ভালোবাসার জন্য দুনিয়ার অন্য সবকিছুর প্রতি তার পক্ষপাতিত্বের অবসান ঘটাতে হবে। আল্লাহর রসুল এবং মুমিনদের ভালোবাসার মাধ্যমে ইমানের স্বাদ লাভ করা যায়। রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘তিনটি বৈশিষ্ট্য যার মধ্যে আছে সে ইমানের স্বাদ লাভ করবে। (ক) আল্লাহ এবং তার রসুল তার কাছে সর্বাধিক প্রিয় হবে। (খ) কোনো মানুষকে ভালোবাসলে একমাত্র আল্লাহর উদ্দেশ্যেই ভালোবাসবে। (গ) আল্লাহ তাকে কুফরি থেকে মুক্তি দেওয়ার পর পুনরায় তাতে ফিরে যাওয়াকে ঘৃণা করবে, যেমন আগুনে নিক্ষিপ্ত হওয়াকে সে ঘৃণা করে’ (বুখারি ও মুসলিম)। অন্তরে যদি ভালোবাসার বীজ বপন করা হয় এবং ইখলাস ও নবী (সা.)-এর অনুসরণ দ্বারা তাকে সিক্ত করা হয়, তবে তাতে রংবেরঙের ফলের সমাহার দেখা যাবে, আল্লাহর হুকুমে তার স্বাদও অত্যন্ত সুমিষ্ট হবে। ভালোবাসা চার প্রকারের : (১) আল্লাহকে ভালোবাসা। এটাই হচ্ছে ইমানের মূল। (২) আল্লাহর কারণে কাউকে ভালোবাসা এবং তার কারণেই কাউকে ঘৃণা করা। এটা হচ্ছে ওয়াজিব ভালোবাসা। (৩) আল্লাহর সঙ্গে অন্যকে ভালোবাসা। অর্থাৎ ওয়াজিব ভালোবাসায় আল্লাহর সঙ্গে অন্যকে অংশী করা। যেমন, মুশরিকদের তাদের মাবুদদের ভালোবাসা। এটা হচ্ছে আসল শিরক। (৪) স্বভাবগত ভালোবাসা। যেমন- পিতা-মাতা, সন্তান, খাদ্যদ্রব্য ইত্যাদিকে ভালোবাসা। এটা জায়েজ। আল্লাহর ভালোবাসা পেতে চাইলে দুনিয়াবিমুখ হতে হবে। রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘তুমি দুনিয়াবিমুখ হও, আল্লাহ তোমাকে ভালোবাসবেন’ (ইবনে মাজাহ)।

  • ইসলামী জীবন
  • ইসলামের আলো