ইসলামে তিনটি কাজে মেলে মুক্তি, তিনটি কাজে ধ্বংস

📄🖋: রুবিনা আক্তার
প্রকাশ: ১ সপ্তাহ আগে
ইসলামে তিনটি কাজে মেলে মুক্তি, তিনটি কাজে ধ্বংস

আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, মুক্তিদানকারী তিনটি বিষয় এবং ধ্বংসকারী তিনটি বিষয় রয়েছে। মুক্তিদানকারী বিষয়গুলো হলো—(১) গোপনে ও প্রকাশ্যে আল্লাহকে ভয় করা, (২) সন্তুষ্টি ও অসন্তুষ্টিতে সত্য কথা বলা, (৩) সচ্ছলতা ও অসচ্ছলতায় মধ্যপন্থা অবলম্বন করা। আর ধ্বংসকারী বিষয়গুলো হলো—(১) প্রবৃত্তি পূজারি হওয়া, (২) লোভের দাস হওয়া এবং (৩) অহংকারী হওয়া। আর এটিই সবচেয়ে মারাত্মক।

(বায়হাকি, শুআবুল ঈমান, হাদিস : ৬৮৬৫; মিশকাত, হাদিস : ৫১২২).

 

মুক্তিদানকারী তিনটি বস্তু হলো –

তাকওয়া : এর অর্থ হলো আল্লাহকে ভয় করা, যা শয়তানের আনুগত্য থেকে মানুষকে রক্ষা করে। এটি মানুষকে সব অসৎকর্ম ও জাহান্নাম থেকে বাঁচাতেও সাহায্য করে। আল্লাহ বলেন, ‘হে মুমিনরা! তোমরা যথাযথভাবে আল্লাহকে ভয় করো এবং তোমরা অবশ্যই মুসলিম না হয়ে মোরো না…।’ (সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ১০২)

মুমিনরা সুদ-ঘুষ, জিনা-ব্যভিচার এবং সব ধরনের অন্যায় থেকে বিরত থাকে শুধুমাত্র আল্লাহর ভয়ের কারণে।

তাহলে তাকওয়া হলো ব্যক্তি ও জাতীয় উন্নতির চাবিকাঠি।

 

সদা সত্য কথা বলা : আল্লাহ বলেন, ‘হে মুমিনরা! তোমরা আল্লাহকে ভয় করো এবং সত্যবাদীদের সঙ্গে থাকো। ’

(সুরা : তাওবা, আয়াত : ১১৯)

রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি আমার কাছে তার দুই চোয়ালের মধ্যবর্তী এবং দুই পায়ের মধ্যবর্তী বস্তু দুটির জামিন হবে, আমি তার জান্নাতের জামিন হবো। ’ (বুখারি, হাদিস : ৬৪৭৪)

 

সচ্ছলতা ও অসচ্ছলতায় মধ্যপন্থা অবলম্বন করা: আল্লাহ বলেন, ‘(আল্লাহর বিনয়ী বান্দা তারাই) যখন তারা ব্যয় করে, তখন তারা অপব্যয় করে না বা কৃপণতা করে না। বরং উভয়ের মধ্যে একটি মধ্যম পন্থা অবলম্বন করে।’ (সুরা: ফুরকান, আয়াত: ৬৭)

 

ধ্বংসকারী তিনটি বস্তু হলো –

প্রবৃত্তি পূজারি হওয়া : আল্লাহ বলেন, ‘তুমি কাফিরদের বলো যে, আল্লাহকে বাদ দিয়ে তোমরা যাদের আহ্বান করো, তাদের ইবাদত করতে আমাকে নিষেধ করা হয়েছে। বলো, আমি তোমাদের ইচ্ছার অনুসরণ করব না। এতে আমি পথভ্রষ্ট হয়ে যাব এবং সুপথপ্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত হতে পারব না।’ (সুরা : আনআম, আয়াত : ৫৬)

 

লোভের দাস হওয়া : মহান আল্লাহ ইহুদিদের সম্পর্কে বলেন, ‘তুমি তাদের দেখবে পার্থিব জীবনের প্রতি অন্যদের চেয়ে বেশি আকৃষ্ট, এমনকি মুশরিকদের চেয়েও।

তাদের প্রত্যেকের ইচ্ছা থাকে যেন তারা হাজার বছর বেঁচে থাকে। কিন্তু এই দীর্ঘ আয়ু তাদের (মৃত্যু বা আখিরাতের) শাস্তি থেকে রক্ষা করতে পারবে না। আসলে তারা যা কিছু করে, সবই আল্লাহ দেখেন।’

(সুরা : বাকারাহ, আয়াত : ৯৬)

ইসলামের নীতি হলো নেতৃত্বের জন্য আবেদন করা উচিত নয়। রাসুল (সা.) আবদুর রহমান বিন সামুরা (রা.)-কে বলেছিলেন, ‘তুমি নেতৃত্বের জন্য আবেদন করো না। কারণ, যদি তুমি এটি চাওয়ার মাধ্যমে অর্জন কর, তাহলে তোমাকে এর দায়িত্বে নিযুক্ত করা হবে (আল্লাহর সাহায্য থেকে বঞ্চিত করা হবে)। আর যদি তুমি চাওয়ার প্রয়োজন না পড়ে, তাহলে তুমি সাহায্যপ্রাপ্ত হবে।’ (বুখারি, হাদিস : ৬৬২২)

 

অহংকারী হওয়া : আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয়ই যারা আমার আয়াতগুলো মিথ্যা বলে এবং তা থেকে অহংকার ভরে মুখ ফিরিয়ে নেয়, তাদের জন্য আকাশের দরজাগুলো খুলবে না এবং তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে না, যতক্ষণ না সুচের ছিদ্রপথে উষ্ট্র প্রবেশ করে। এভাবেই আমি অপরাধীদের শাস্তি দিই।’ (সুরা : আরাফ, আয়াত : ৪০)

  • ইসলামী জীবন
  • সব খবর