অন্যের সাফল্যে ঈর্ষা (হিংসা) নয়

📄🖋: রুবিনা আক্তার
প্রকাশ: ৩ সপ্তাহ আগে
ছবি : সংগৃহীত

কিছু মানুষ অন্যের সাফল্য সহ্য করতে পারে না। যখন কেউ আল্লাহর রহমতে তার থেকে এগিয়ে যায়, তখন সে তা মেনে নিতে পারে না। তাই সে প্রতিনিয়ত চেষ্টা করে তার সাফল্যকে ম্লান করার। তার মনোবল ভেঙে দিতে সে সামনে-পেছনে মিথ্যা ও অযৌক্তিক সমালোচনা করে।

সফল হওয়ার জন্য নিজের কাজে মনোযোগ না দিয়ে অন্যের ক্ষতি করার জন্য নানা ফন্দি আঁটে। মিথ্যা প্রচারণা চালায়, যা কখনোই একজন মুমিনের কাজ হতে পারে না; বরং এ ধরনের কাজ মানুষকে আরো পিছনে ঠেলে দেয়। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন, ‘দুর্ভোগ সেই লোকের, যে সামনে-পেছনে মানুষের নিন্দা করে।’ (সুরা : হুমাজাহ, আয়াত : ১)

অন্য আয়াতে বলা হয়েছে, ‘হে ঈমানদাররা, তোমরা বেশি অনুমান থেকে দূরে থাকো।

কারণ কিছু অনুমান পাপ এবং তোমরা একে অপরের গোপন বিষয়গুলো অনুসন্ধান করো না এবং একে অপরের গিবত করো না। তোমাদের মধ্যে কি কেউ তার মৃত ভাইয়ের গোশত খেতে চাইবে? নিশ্চয়ই তোমরা একে ঘৃণ্য মনে করো। আর তোমরা আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন করো; নিশ্চয়ই আল্লাহ তাওবা গ্রহণকারী, পরম দয়ালু।’ (সুরা : হুজুরাত, আয়াত : ১২)

সাফল্য আল্লাহর এক বিশেষ নিয়ামত। মহান আল্লাহ যাকে চান, তাকেই সফল করেন। যারা অন্যের সাফল্যে অযৌক্তিকভাবে দুঃখিত হন, তারা মূলত আল্লাহর সিদ্ধান্তে খুশি হতে পারেন না বলেই দুঃখিত হন। কারণ পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেছেন, ‘তারা কি আপনার রবের রহমত বণ্টন করে? আমিই দুনিয়ার জীবনে তাদের মধ্যে তাদের জীবিকা বণ্টন করি এবং তাদের একজনকে অন্যের ওপর মর্যাদায় উন্নীত করি, যাতে একে অন্যের দ্বারা কাজ করিয়ে নিতে পারে; আর আপনার রবের রহমত তারা যা জমা করে তা থেকে উত্কৃষ্টতর।’ (সুরা : জুখরুফ, আয়াত : ৩২)

তাহলে কোনো মুমিন তার অন্য ভাইয়ের সাফল্যে দুঃখিত হতে পারে না। তাকে ধ্বংস করার চেষ্টা করতে পারে না।

যদি আল্লাহ কাউকে সফলতা দিতে চান, তাহলে কারো হিংসা, বিদ্বেষ ও মিথ্যা অপবাদ, ষড়যন্ত্র কিছুই তার ক্ষতি করতে পারবে না। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন, ‘আল্লাহ মানুষের প্রতি কোনো অনুগ্রহ অবারিত করলে কেউ তা নিবারণকারী নেই এবং তিনি কিছু নিরুদ্ধ করতে চাইলে কেউ তার উন্মুক্তকারী নেই। আর তিনি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাবান।’ (সুরা : ফাতির, আয়াত : ২)।

অর্থাৎ মহান আল্লাহ যখন কারো প্রতি রহমতের দৃষ্টি দেন, তখন কেউ তার ক্ষতি করতে পারে না। এমনকি যদি পুরো পৃথিবী তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে, তাও কিছুই করতে পারবে না। একবার রাসুল (সা.) ইবনে আব্বাস (রা.)-কে বলেছিলেন, ‘জেনে রেখো, যদি সব মানুষ তোমার উপকারের জন্য একত্রিত হয়, তবে তারা ততটুকু উপকারই করতে পারবে, যতটুকু আল্লাহ তাআলা তোমার জন্য নির্ধারণ করেছেন। আর যদি সব মানুষ তোমার ক্ষতি করার জন্য একত্রিত হয়, তাহলে তারা ততটুকু ক্ষতি করতে পারবে, যতটুকু আল্লাহ তাআলা তোমার তাকদিরে লিখে রেখেছেন।’ (তিরমিজি, হাদিস : ২৫১৬)

অতএব, কারো সাফল্যে দুঃখিত না হয়ে বরং খুশি হওয়া উচিত। তাকে সহযোগিতা করা উচিত। সফলতার জন্য নিষ্ঠা ও সততার সঙ্গে চেষ্টা করা উচিত। মহান আল্লাহ কারো চেষ্টা বৃথা করেন না। মহান আল্লাহ সবাইকে এই নিকৃষ্ট অভ্যাস ত্যাগ করার তাওফিক দান করুন।

  • ইসলামী জীবন
  • ইসলামের আলো