চাঁদাবাজি ধান্দার কাছে জীবনযাত্রা বাঁধা পড়ে আছে। জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত সব ক্ষেত্রেই চলছে চাঁদাবাজির ধকল। ব্যবসা-বাণিজ্য নিশ্চিত রাখতে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান টেকাতে, সর্বোপরি প্রাণ বাঁচাতেও কাউকে না কাউকে চাঁদা দিতে হচ্ছে। সন্ত্রাসী-চাঁদাবাজদের কবল থেকে রক্ষা পেতে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাহায্য পেতেও দিতে হয় আরেক ধরনের চাঁদা।
বর্তমানে বাসাবাড়িতে নবজাতক জন্মালেও চাঁদার হাত বাড়ায় একদল হিজড়া। তারা নবজাতককে ঘিরে হৈচৈ, নাচ-গানের বিপরীতে কেবলই চাঁদা খুঁজে। মৃত্যুর পরও স্বস্তি নেই। মসজিদের আঙিনায় জানাজা দেওয়াসহ কবরস্থানে দাফন করা পর্যন্ত সব ধাপেই সংশ্লিষ্টদের চাহিদা পূরণ করতে হয় স্বজনদের।
এমনকি কবরস্থান থেকে লাশ চুরি ঠেকাতেও মাসোয়ারা দেওয়ার নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। চাঁদাবাজি থামছে না কিছুতেই। হাতিয়ার ফুটপাথ থেকে শুরু করে নির্মাণাধীন বহুতল ভবন পর্যন্ত, তৃণমূল থেকে শীর্ষ পর্যায়েও প্রভাব বিস্তার করে চলছে চাঁদা। নৌপথ, নৌ-ঘাট, পরিবহন, ডিস, ইন্টারনেট প্রোভাইডার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি-কোচিং বাণিজ্যসহ অনিয়ম-দুর্নীতি টিকিয়ে রাখতে ম্যানেজিং কমিটিকেও এখন নিয়মিত চাঁদা দিতে হয়।
ভুক্তভোগীদের মতে, চাঁদাবাজির ধরনেও নানা আধুনিকতার ছোঁয়া লেগেছে, পাল্টে গেছে চাঁদার পরিমাণ ও স্টাইল। আগে কেবল শীর্ষ সন্ত্রাসীরা চাঁদাবাজি করত, এখন শীর্ষ সন্ত্রাসীর সহযোগীদের সঙ্গে যোগ হয়েছে রাজনৈতিক প্রভাবশালী গ্রুপ।
নোয়াখালী জেলার হাতিয়ার উপজেলার মনোরম পরিবেশের স্থান তমরদ্দি ইউনিয়ন, এখানের ঘাট দিয়ে ঢাকা রুটে প্রতিনিয়ত যাতায়াত করছে হাজার হাজার যাত্রী, অন্যান্য জায়গার মত এখানেও থেমে নেই চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসী,ও লুটপাট, লুটতরাজ ইত্যাদি সহ নানান কর্ম কান্ড, প্রতিনিয়তই ঘটছে সব কিছু।
আর এই সব কিছুই চলছে হাতিয়া উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মোঃ আলমগীর হোসেন, (তমরদ্দি ইউনিয়নের সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা মিরাজ সর্দার ওনারা মামু ভাগিনা) এর সহযোগীরা এনায়েত, ফারহান উদ্দিন, আরো অনেকে সহ পুরো তমরদ্দি ইউনিয়নে তারা চাঁদাবাজি, বাজারে দোকান লুট, হিন্দুবাড়িতে হামলা, ঘাট দখল, তমরদ্দি ঘাটে বর্তমানে নৈরাজ্য সৃষ্টি থেকে শুরু করে সব ধরনের কর্মকাণ্ডে তারা নিয়মিত যুক্ত। এবং পারভেজ মাঝির এমনও লোক রয়েছে যে হাতিয়া থানার নির্বাহী কর্মকর্তা কে বদলি করতে তার ২৪ ঘন্টা ও লাগবে না।
সম্প্রতি বিএনপি নেতা আলমগীর সহ সবাইকে নিয়ে এসব কর্মকাণ্ডের ভিত্তিতে ১১ মিনিট ১২ সেকেন্ডের একটা অডিও কলের রেকর্ড দ্যা ঢাকা নিউজ এর কাছে এসেছে। সেখানে বলা হয়, পারবেজ মাঝিকে জিজ্ঞেস করা হয়, (অপর প্রান্তের লোক) আমাকে বাবু চেয়ারম্যান (আগে বিএনপি করতো, মাঝখানে আওয়ামী লীগ করলো, এখন আবার বিএনপি) জানালো তুমি নাকি আলমগীরকে ১০ লক্ষ টাকা চাঁদা দিছো, সে জানায়
আলমীর,ফারহান ও তাহের মেম্বারে গো এনায়েত সহ নাকি একটা মামলা হয় শামীম সহ, এবং দল চালাতে নাকি আলমগীরের অনেক টাকা খরচ হয়, তাই ১০ লক্ষ টাকা চাইছে। এটা আজহারে কল দিয়ে পারবেজ মাঝিকে বলেছে আলমগীর ভাই বলছে ১০ লক্ষ টাকা দিতে। ওটা নিয়ে এনায়েত এর সাথে পারবেজ মাঝির সাথে বাড়াবাড়ি হয়। এবং বিএনপি নেতা আলমগীর বলছে আমার আমার দলীয় কর্মীদেরকে চালাতে মিছিল মিটিং করতে অনেক টাকা খরচ হয় প্রতি দিন, তাই বিএনপি দলের নাম বিক্রি করে চাঁদা নিচ্ছে বিএনপি নেতা আলমগীর ও তার সহযোগীরা।
কল রেকর্ডে আরো জানা যায়, হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সাথে ও তার ভালো সম্পর্ক রয়েছে, এবং আত্মার সম্পর্ক রয়েছে বলে যানা যায়, একই টেবিলে বসেও চা পান আরো মদ পান করেন বলেও শুনা যায়।এবং এটাও শুনা গেলো পারবেজ মাঝির এমনও পাওয়ার রযেছে হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার কে ২৪ ঘন্টায় বদলি করার ক্ষমতা রয়েছে।
হাতিয়াতে চাঁদাবাজির যে অন্যতম লোকেশন গুলো রয়েছে তার মধ্যে ঘাট সহ তমরদ্দি ইউনিয়ন একটি, প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ টাকা চাঁদাবাজি, লুটপাট, হুমকি দুমকি সবই হচ্ছে।
আরেকটা ২৩ সেকেন্ডের অডিও রেকর্ডে জানা জানা যায়
হাসান মাঝি থেকে আলমগীর ৩০ হাজার টাকা চাঁদা নিয়েছেন। এটাও জানা যায় আলমগীর এগুলো করে থাকে
সাবেক এমপি ফজলুল আজিমের পিএস আফসারের সাহসে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, বিএনপির দলের ও নেতা কর্মীদের পিছনে খরচ আছে বলে আলমগীর আমাদের থেকে চাঁদা নেয়, এবং তার সহযোগীরা, না দিতে চাইলে হুমকি দমকি শুরু হয়।
এই বিষয়ে আলমগীর বলেন – আমার বিরুদ্ধে অপ্রচার চলতেছে, আমি এমন কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত নই, আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে, তবে তিনি সবকিছুই অস্বীকার করেন।
এই বিষয়ে জানার জন্য হাতিয়া উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী তানভীর উদ্দিন রাজিব কে বার বার ফোন করলেও তিনি তা রিসিভ করেন নি।
এই বিষয়ে হাতিয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি এ কে এম ফজলুল হক খোকন বলেন, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান মহোদয় যে কোন অপরাধের বিষয়ে দল থেকে জিরো টলারেন্স অলরেডি দিয়েছেন। আমিও তাই বলবো, কোন অপকর্ম কারী বিএনপি দলে থাকতে পারবে না। আপনি যে বিষয় টা বললেন যদি তার অভিযোগটা প্রমানিত হয় তবে অবশ্যই দল তার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিবে এতে কোন সন্দেহ নেই।
এই বিষয়ে হাতিয়া উপজেলার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ জিসান আহমেদ বলেন,আমি আলমগীর কে ছিনি তবে এই বিষয়ে আমি কিছু জানি না।
হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শুভাশীষ চাকমা জানান, আমি আলমগীরের কে ছিনি না, আর আমি বিষয়ে কিছু জানিও না।
এই বিষয়ে ওলামাদল কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও জেলা ছাত্রদলের সাবেক ধর্ম সম্পাদক ফারুক আল ফাহাদ বলেন, আমাদের অভিবাবক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মহোদয় যে কোন অপরাধের বিষয়ে দল থেকে জিরো টলারেন্স অলরেডি লিখিত আকারে বলে দিয়েছেন। আপনি যে বিষয় টা বললেন যদি তার অভিযোগটা প্রমানিত হয় তবে অবশ্যই দল তার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিবে এতে কোন সন্দেহ নেই। কারন অপরাধীর ক্ষেত্রে যে কোন পদদারী নেতা হোকনা কেন দল এ বিষয়ে কোন আপোষ করছেনা। আপনি জেনে থাকবেন কেন্দ্রীয় একাধিক নেতার বিষয়ে ও শোকজ এবং বহিস্কারের মত সিদ্ধান্ত আসছে। তাছাড়া উল্যেখিত ব্যক্তির বিষয়ে আরো কিছু অভিযোগ আমি শুনেছি। আমি ব্যক্তিগতভাবে বিষয় টা নিয়ে হাইকমান্ডের কথা বলব।।