ভারত বলছে অতিরিক্ত পানির চাপে বাঁধের গেটগুলো একা একাই খুলে গেছে
বাংলাদেশের বন্যা মূলত বাঁধের নিচের দিকের বৃহৎ ক্যাচমেন্টের পানির কারণে
তীব্র পানির স্রোতে ভেসে গেছে ঘরবাড়ি-ফসল ও পশুপাখি। মারা গেছে মানুষও। ত্রিপুরায় গোমতী নদীর উজানে ডুম্বুর বাঁধ খুলে দেওয়ার ফলে ভয়াবহ বন্যায় ভেসে গেছে বাংলাদেশের ৯টি জেলা।
এদিকে ভারত ও বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চলীয় সীমান্ত এলাকায় চলমান বন্যা পরিস্থিতির জন্য ত্রিপুরার গোমতী নদীর বাঁধ খুলে দেওয়া নিয়ে যে আলোচনা চলছে, তা সঠিক নয় বলে বলছে ভারতের পররাষ্ট মন্ত্রণালয়।
দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায় ভারত কোনো বাঁধের মুখ খুলে দেয়নি, অতিরিক্ত পানির চাপে বাঁধের গেটগুলো অটোমেটিক খুলে গেছে।বৃহস্পতিবার সকালে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে এক বিবৃতিতে এ কথা জানানো হয়।
এছাড়া বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘আমরা বাংলাদেশে উদ্বেগ প্রকাশ করতে দেখেছি যে, ত্রিপুরায় গোমতী নদীর উজানে ডুম্বুর বাঁধ খুলে দেওয়ায় বাংলাদেশের পূর্ব সীমান্তের জেলাগুলোতে বর্তমান বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। তবে বাস্তবে এটি সঠিক নয়।
তাঁরা আরও জানায়, গত কয়েকদিন ধরে ভারত এবং বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত গোমতী নদী সংলগ্ন অঞ্চলে এ বছরের সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হচ্ছে। আর বাংলাদেশের বন্যা মূলত বাঁধের নিচের দিকের এই পানির কারণে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ডুম্বুর বাঁধটি সীমান্ত থেকে বেশ দূরে- বাংলাদেশের ১২০ কিলোমিটারেরও বেশি উজানে অবস্থিত। এটি একটি কম উচ্চতার (প্রায় ৩০ মিটার) বাঁধ, যা বিদ্যুৎ উৎপাদন করে ভারতীয় গ্রিডে সরবরাহ করে এবং সেখান থেকে বাংলাদেশও ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পায়।
দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরও বলেছে, প্রায় ১২০ কিলোমিটার নদীপথে আমাদের অমরপুর, সোনামুড়া এবং সোনামুরা ২-এ তিনটি জলস্তর পর্যবেক্ষণ সাইট রয়েছে। গত ২১ আগস্ট থেকে সমগ্র ত্রিপুরা এবং পার্শ্ববর্তী বাংলাদেশের জেলাগুলোতে ভারী বর্ষণ অব্যাহত রয়েছে। এর ফলে অতিরিক্ত পানি প্রবাহের কারণে বাঁধে স্বয়ংক্রিয় ‘রিলিজ’ পরিলক্ষিত হয়েছে।
এছাড়া ভারত আরও বলছে, তাদের ও বাংলাদেশের মধ্যকার অভিন্ন নদীগুলোতে বন্যা একটি যৌথ সমস্যা, যা উভয় পক্ষের জনগণের জন্যই দুর্ভোগ সৃষ্টি করে। এটি সমাধানের জন্য ঘনিষ্ঠভাবে পারস্পরিক সহযোগিতা প্রয়োজন।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, দুই দেশে ৫৪টি আন্তঃসীমান্ত নদী রয়েছে, তাই নদীগুলোর পানি সহযোগিতা আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পৃক্ততার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। আমরা দ্বিপাক্ষিক পরামর্শ ও প্রযুক্তিগত আলোচনার মাধ্যমে পানিসম্পদ এবং নদীর পানি ব্যবস্থাপনার সমস্যা ও পারস্পরিক উদ্বেগ সমাধানে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।