নোয়াখালীর হাতিয়ায় ‘উত্তর পশ্চিম গুল্যাখালী হাজী গিয়াস উদ্দিন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়’র প্রধান শিক্ষক আব্দুল কাদিরের দুর্নীতি-অনিয়ম ও অসদাচরণ করার কারণ দেখিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ দেন স্থানীয় এলাকাবাসী।
মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে দশজন ব্যক্তির স্বাক্ষরিত একটি অভিযোগপত্র শিক্ষার্থী অভিভাবক ও এলাকাবাসী উপজেলা পরিষদে এসে নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট জমা দেন।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, উপজেলার উত্তর পশ্চিম গুল্যাখালী হাজী গিয়াস উদ্দিন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল কাদির দীর্ঘদিন এই স্কুলে অবস্থান করায় বিভিন্ন ধরণের দুর্নীতি-অনিয়ম করে আসছে। তার দুর্নীতির পাশাপাশি শিক্ষার্থীসহ অভিভাবকদের সাথে অশোভন আচরণের ফলে স্কুলটির অবকাঠামোসহ শিক্ষায় ধস নেমেছে। শিক্ষার্থীশুন্য পুরো বিদ্যালয়।
প্রধান শিক্ষক আব্দুল কাদির অনিয়ম ও অসদাচরণের ফলে শিক্ষার্থীরা সহ আশপাশের সকলে অতিষ্ঠ হয়ে উঠছে। স্লীপ বরাদ্দ থেকে শুরু করে সরকারি সকল বরাদ্দ তিনি নামমাত্র খরচ দেখিয়ে ইচ্ছে মতো ভোগ করে যাচ্ছেন। যাহা সহকারী শিক্ষকদেরও জানতে দিচ্ছেন না। চলতি বছরের ৫ আগস্ট সরকার পতনের আগের বছরগুলোতে তিনি তার অনুগত স্কুল কমিটি সাজিয়ে যেনতেন ভাবে স্কুল পরিচালনা করতেন। যেখানে স্কুল প্রতিবেশী কোনো মানুষকে তোয়াক্কা করতেন না। শিক্ষক দালালদের সহযোগিতায় তৎকালীন সকল অনিয়ম করতেন। নিয়ম কানুন না মেনে যখন ইচ্ছে তখন স্কুলে আসেন। ফলে তার সহকারীরাও একই ধাঁচে চলতে থাকে।
স্কুলটিতে কোনো পড়াশোনা না থাকায় পার্শ্ববর্তী সকল শিক্ষার্থীরা স্কুল বিমুখ হয়ে পড়ছে। ছাত্র-ছাত্রী সংগ্রহের জন্য তারা মানুষের বাড়ি ঘরেও কখনো যায়নি। শিক্ষা অফিসেরও নেই কোনো মনিটরিং। কর্মকর্তাদের কেউ কখনো ভিজিটে এসে শিক্ষার্থী না দেখলে প্রধান শিক্ষক সহজ করে বলে দেন- আশপাশে মাদ্রাসা আছে। তাই তাদের ছাত্র-ছাত্রী সংকট! মূলত প্রধান শিক্ষকের অনিয়মের কারনেই শিক্ষার্থী সংকট।
অভিযোগে আরও বলা হয়, কিছুদিন আগে শিক্ষা অফিসার স্কুলটির ভিজিটে আসার খবর পেয়ে প্রধান শিক্ষক পার্শ্ববর্তী মাদ্রাসায় পড়ুয়া সেলিমের ছেলে সিয়ামকে কিছুক্ষণের জন্য স্কুলে বসতে বলেন। ছেলেটা কথা না শুনায় প্রধান শিক্ষক তাকে মারধর করেন। পরে ছেলেটির দাদা আবু তাহের এ ঘটনার প্রতিবাদ জানান।
এতে বলা হয়, গত চারদিন আগে স্কুলটিতে পড়ুয়া তামান্না নামের এক ছাত্রীকে শিক্ষকদের টিফিন বাক্স সহ অন্যান্য সামগ্রী ধোয়ামোছার বিষয়ে মারধর করেন। ছাত্রীর বাবা নবীর ডুবাই স্থানীয় দিদার, সোহরাবসহ বিভিন্নজনকে জানান তার মেয়ে শিক্ষকদের খাবারের পাতিল, তাদের বাচ্চাদের ময়লার পোশাক সহ টয়লেট পরিস্কারের জন্য সকাল ১০টার মধ্যে না আসায় তাকে মারধর করেন।
এদিকে, একই অভিযোগ পত্রের একটি অনুলিপি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার নিকট দেন। ডাকযোগে একটি অনুলিপি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার নিকটও প্রেরণ করা হয় বলে জানান, অভিযোগকারী সাইফুল, নবীরসহ অন্যান্যরা। তারা বলেন, প্রধান শিক্ষক বেসরকারি স্কুল থেকে আসায় লেখাপড়াও জানেনা, মানুষের সাথে কথা বলেন গালমন্দ করে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুল কাদির জানান, তার বিরুদ্ধে এগুলো চক্রান্ত করা হচ্ছে।
এই বিষয়ে হাতিয়া উপজেলা শিক্ষা অফিসার আবদুল জব্বার কে দিলে তিনি দ্যা ঢাকা নিউজ প্রতিনিধির সাথে কথা বলতে নারাজ, তাই তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি সাম্প্রতি উপজেলা শিক্ষা অফিসার আব্দুল জব্বারের বিরুদ্ধে ও দুর্নীতি ও চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠলে এই নিয়ে বাংলাদেশ টুডে, দৈনিক প্রতিদিনের সংবাদ ও দ্যা ঢাকা নিউজ প্রতিবেদন হয়।
জেলা প্রথমিক শিক্ষা অফিসার মনছুর আলী চৌধুরী জানান, এই বিষয়ে আমি এখনো পর্যন্ত কিছু জানি না। আর হাতিয়া উপজেলা শিক্ষা অফিসার দ্যা ঢাকা নিউজ প্রতিধিনির সাথে কথা বলতে নারাজ এটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানান।
অভিযোগ প্রসঙ্গে হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মিল্টন চাকমা বলেন, প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ খতিয়ে দেখে, সঠিক তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নিব।