হরিণ শিকার কিংবা হত্যা নিষিদ্ধ হলেও মাংস বিক্রির জন্য নিঝুম দ্বীপে সারা বছর চলতো হরিণ নিধন। আর এ কাজে লিপ্ত নোয়াখালীর নিঝুম দ্বীপে হরিণ শিকারির বেশ কয়েকটি শিকারি দল ছিলো, বেশিরভাগই শিকারির দল চলতো স্থানীয় সাবেক চেয়ারম্যান মেহরাজ উদ্দিন ওরুপে মেহরাজ পার্টির নির্দেশে। এছাড়াও তার শাসন আমলে দুর্নীতি ও অনিয়মের শেষ ছিলো না, হরিণের রাজ্য নিঝুম দ্বীপে।
জানা যায়, মেহরাজ চেয়ারম্যান বন বিভাগের কিছু অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রভাবশালী, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কিছু অসাধু সদস্যকে ‘ম্যানেজ’ করে নানা কৌশলে হরিণ হত্যা চালাতো বনে। হরিণ হত্যার পর বনের ভেতরেই মাংস কেটে প্যাকেট করা হতো। প্রভাবশালী মহলের যোগসাজশে স্থানীয়ভাবে ও বিভিন্ন শহরাঞ্চলে সেগুলো বিক্রি করতেন মেহরাজ চেয়ারম্যান। প্রধান সড়ক এড়িয়ে ছোট সড়ক বা নৌপথে পাচার করতেন সেসব মাংস। এ ক্ষেত্রে বেশিরভাগ সময় ব্যবহার করতেন ককশিটের প্যাকেট। বরফ দেওয়া মাছের সেই প্যাকেটের একেবারে নিচে থাকতো হরিণের মাংস।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, হরিণের মাংস ১৫০০ থেকে ২ হাজার টাকা বিক্রি করতেন। এবং তিনি শহরাঞ্চলে সরবরাহ করতেন কেজিতে নিতেন ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা। এবং সে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, রাজনীতিক, মানুষের কাছে হরিণের মাংস উপহার হিসেবে পাঠাতেন। অনেক সময় উপঢৌকন হিসাবেও হরিণের মাংস, চামড়া এমনকি জ্যান্ত হরিণও পাচার করতেন বলেও জানা যায়।
স্থানীয় বাসিন্দা আলী ও রতন বলেন, মেহেরাজ দীর্ঘ ১০ বছর চেয়ারম্যান ছিল। সে ক্ষমতায় থেকে সাধারণ জনগণের জমি দখল, হরিণ ব্যাবসা, অনিয়ম ও দুর্নীতি করে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছে। আজ (বুধবার) সকালে নিঝুম দ্বীপ ঢুকে তার অতীতের সন্ত্রাসী কার্যকলাপ শুরু করার চেষ্টা করেছে। নৌবাহিনী ও পুলিশের সহযোগিতায় অবশেষে তাকে ৬ নভেম্বর রাত ১২ টার দিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
হাতিয়া থানার কর্মকর্তা (ওসি) মো. তাওহিদুল আনোয়ার বলেন, সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ সভাপতি মেহেরাজের বিরুদ্ধে তিনটি গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা আছে। দীর্ঘদিন ধরে পলাতক ছিলেন, এবং নিজ বাড়িতে অবস্থান করলে তাকে গ্রেপ্তার করে থানায় আনা হয়েছে। তাকে বিচারক আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হবে।