কোটা সংস্কার আন্দোলন এবং কারফিউর প্রভাবে কিছুদিন সারা দেশে পণ্য পরিবহন ব্যবস্থা ব্যাপকভাবে ব্যাহত হয়। এতে লাগামহীন হতে শুরু করে বাজার। তবে গত সপ্তাহে সরবরাহ ব্যবস্থা অনেকটাই স্বাভাবিক হওয়ায় কমে যায় পণ্যের দাম। ব্যবসায়ীরা বলেছিলেন, সামনে বাজার আরও স্বাভাবিক হবে। কিন্তু এর মাঝেই সরকার পতন ও আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় পণ্যের দামে আবারও ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা লক্ষ্য করা গেছে। তবে কিছু কিছু পণ্য আগের দামে স্থিতিশীল রয়েছে।
শেখ হাসিনা নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর নিত্যপণ্যের দাম কমেছে এমন খবর ছড়িয়েছে ফেসবুকে। সামাজিক মাধ্যমে পণ্যের দামের যে তালিকা ঘুরে বেড়াচ্ছে তাতে বলা হচ্ছে, আলু-৪০ টাকা, পেঁয়াজ ৭০ টাকা, গরুর মাংস ৬৫০ টাকা, খাসির মাংস ৮০০ টাকা, বয়লার ১৪০ টাকা, দেশি মুরগি ৪০০ টাকা। কিন্তু বাস্তবে চিত্র ভিন্ন।
রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, গত সপ্তাহের দামেই প্রতি কেজি পেঁপে ৫০, পটল ৬০, শশা ১০০, বরবটি ১০০, টমেটো ১৬০, ঢেঁড়শ ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে করলা ও বেগুন কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দ্বিগুণ দাম বেড়েছে ধনিয়া পাতার। ১৫০ টাকার ধনিয়া পাতা বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকায়। ২৮০ টাকার কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৩৮০-৪০০ টাকায়।
চাল, পেঁয়াজ, আদা এখনও আগের চড়া দামেই বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি আলু ৬০, পেঁয়াজ ১২০-১৩০ ও আদা বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকায়। অপরিবর্তিত রয়েছে মুরগি ও ডিমের দাম। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৭০-১৮০ টাকায় আর সোনালি মুরগি ২৭০-২৮০ টাকায়। ফার্মের মুরগির ডিমের ডজন ৫ টাকা বেড়ে ১৫০ টাকায় কিনতে হচ্ছে ক্রেতাদের এছাড়া গরুর মাংস ৮৫০ ও খাসির মাংস ১১০০ টাকা প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে।
সরবরাহ বাড়লেও মাছের দাম কমেনি। গত সপ্তাহের দামেই বিক্রি হচ্ছে বেশিরভাগ মাছ। তবে ইলিশের দাম কিছুটা বাড়তি। গত সপ্তাহের তুলনায় ২০০-৩০০ টাকা বেড়েছে ইলিশের দাম। খুচরা বাজারে এক কেজি ওজনের ইলিশ ১৭০০ থেকে ১৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ছোট ইলিশ (৫০০ থেকে ৬০০ গ্রাম) বিক্রি হচ্ছে ১২০০ থেকে ১৪০০ টাকায়।
প্রতি কেজিতে পাঙাশ ১৮০ থেকে ২০০ টাকায়, তেলাপিয়া ২৪০-২৬০ টাকায়, শিং ৫০০-৬০০ টাকায়, রুই (দেড়-দুই কেজি) ৩৫০ থেকে ৩৬০ টাকায়, আর পাবদা ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
চালের বাজারে তৈরি হওয়া অস্থিরতা কাটেনি। চালের বস্তাপ্রতি (৫০ কেজির বস্তা) ১০০-১৫০ টাকা পর্যন্ত বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে।
মোটা চাল (স্বর্ণা) কেজিতে ২ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৫২ টাকায়। অর্থাৎ বস্তাপ্রতি দাম বেড়েছে ১০০ টাকা। এছাড়া মাঝারি মানের চাল (বিআর-২৮) প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫৬ টাকায়; গত সপ্তাহে এর দাম ছিল ৫৫ টাকা। কেজিতে ৩ টাকা বেড়ে বিআর-২৯ বিক্রি হচ্ছে ৫৮ টাকায়।