স্থানীয় রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে রাজনৈতিক ভাবে প্রভাব বিস্তার করে শিক্ষক ও নেতা সেজে, লক্ষ লক্ষ টাকা দুর্নীতি, এবং অতিরিক্ত টাকা আদায় সহ যোগদানের পর থেকে কর্মস্থলে মাসের পর মাস অনুপস্থিত, সাপ্তাহিক ১ থেকে ২ দিন উপস্থিত থেকে ২ থেকে ৩ ঘন্টা ক্লাস করা সহ রয়েছে বহু অভিযোগ। নোয়াখালী জেলা হাতিয়া উপজেলার ৮ নং সোনাদিয়া ইউনিয়নের মধ্য মাইজচরা, মধ্য মাইজচরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল আহাদ ও তার স্ত্রী শূন্যরচর হাজী আলতাফ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাজমা আরা বেগমের বিরুদ্ধে।
জানা যায় দলীয় প্রভাব খাটিয়ে স্কুলের ভিন্ন মতালম্বীদের উপর নির্যাতন, দলীয় শিক্ষকদের টাকার বিনিময়ে বিভিন্ন প্রশিক্ষনে প্রেরণ, স্কুলের সরকারি অর্থ আত্মসাৎ, স্কুলে স্বামী স্ত্রী দুজনেই মাসের পর মাস অনুপস্থিত,সহ নানাবিধ অনিয়মের সাথে জড়িত।
জানা যায়, আবদুল আহাদের স্ত্রী নাজমা আরা বেগমকে তার চাকরি জীবনে সরকারি অর্থ আত্মসাৎ ও বিভিন্ন দুর্নীতির কারনে ৩-৪ স্কুলে বদলি করে দেওয়া হয়। বর্তমানে নাজমা আরা বেগম শূন্যরচর হাজী আলতাফ হোসেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছেন। এর আগে তার সাবেক স্কুল পূর্ব জোড়খালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত অবস্থায় ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে ৬৫ হাজার, ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে ১ লক্ষ ৫০ হাজার, ২০১৯-২০ অর্থ বছরে ১ লক্ষ ১০ হাজার, ২০২০-২১ অর্থ বছরে ১ লক্ষ টাকা, ২০২১-২২ অর্থ বছরে ১ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা সহ বিদ্যালয়ের ১৪ টি ভেন্টিলেটর গ্রিল বাড়িতে নিয়ে আত্মসাৎ করেন।
নাজমা আরা বেগমের লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ এর বিষয়ে তার সাবেক স্কুল পূর্ব জোড়খালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের পক্ষ থেকে ২৭ সেপ্টেম্বর ২৩ তারিখে হাতিয়া উপজেলা শিক্ষা অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়। এবং স্বামী স্ত্রী দুজনের অনিয়ম ও দুর্নীতি, সরকারি অর্থ আত্মসাৎ নিয়ে গত বছর টিউকে বিচার দেয়া হয়, এবং গোপন সূত্রে জানা যায় টিউকে ২০০০০/- ঘুষ দিয়ে মেনেজ করে এভাবে অনিয়ম করতেছে প্রায় ৬/৭ বছর ধরে স্বামী এবং স্ত্রী দুজনেই।
সাম্প্রতি নাজমা আরা বেগমের স্বামী আবদুল আহাদ মধ্য মাইজচরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তার অনিয়ম ও দুর্নীতি, অর্থ আত্মসাৎ, বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকা সহ বিভিন্ন অপকর্মের বিরুদ্ধে জড়ো হয়ে স্কুলের মধ্যে মানববন্ধন করে এলাকাবাসী। প্রধান শিক্ষক আবদুল আহাদের জন্য এই স্কুলের অধঃপতন হচ্ছে দিন দিন, তাই তার উপর ক্ষিপ্ত স্কুলের ছাত্র ছাত্রী, অভিভাবক সহ এলাকাবাসী।
অনুসন্ধানে দেখা যাই বানিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রামের খুলশী আবাসিক এলাকায় ৭০ লক্ষ টাকা দিয়ে বিশাল এক আলিসান ফ্ল্যাট কিনেছেন এই স্বামী স্ত্রী দুই প্রধান শিক্ষক। হঠাৎ এতো লক্ষ টাকার উৎস কোথায়।
এই সকল বিষয়ে প্রধান শিক্ষক আবদুল আহাদ জানান, আমার বিরুদ্ধে সকল অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট, তারা আমার স্কুলের পাশে গড়ে উঠা অবৈধ ইট ভাটার বিরুদ্ধে মানববন্ধন করার জন্য ছাত্র ছাত্রী চেয়েছে আমি দিতে অস্বীকৃতি জানালে আমার বিরুদ্ধে এলাকাবাসীকে ডেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিডিও তৈরি করে আপলোড করে। আর আমি চট্টগ্রাম খুলশী আবাসিক এলাকায় ফ্ল্যাট কিনেছি ৩৫ লক্ষ টাকায়, ৭০ লক্ষ টাকায় নয়। তবে কোথায় থেকে এতো টাকায় পেয়েছেন সেটার জবাব তিনি দিতে পারেন নি।
এসব বিষয়ে হাতিয়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুল জব্বার বলেন, আমার কাছে এখন পর্যন্ত কোন অভিযোগ আসে নি, যদি আসে সঠিক তদন্ত করে ব্যবস্থা নিবো।
এই বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ও সহকারী কমিশনার ভূমি মিল্টন চাকমা বলেনঃ আপনি যে দুইজন প্রধান শিক্ষকের বিষয়ে আমাকে জানালেন, আমার কাছে এখন পর্যন্ত কোন অভিযোগ আসে নাই। যদি আসে তখন সঠিক তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নিবো।