চট্টগ্রাম নগরের কোতোয়ালি থানার জামাল খানের একটি আবাসিক ভবনের পার্কিং থেকে এস আলম গ্রুপের একটি গাড়ি জব্দ করেছে পুলিশ। ওই ভবনের একটি ফ্ল্যাটে থাকেন চট্টগ্রাম নগরের কোতোয়ালি থানা বিএনপির সভাপতি মঞ্জুরুল আলম চৌধুরী।
বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে তাকে চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে আটক করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিমানবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা ইব্রাহিম খলিল।
এর আগে বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ১০টার দিকে জামালখানের ‘সানমার বিল্ডিং’ নামের একটি ভবন থেকে গাড়িটি জব্দ করে পুলিশ। গাড়িটির রেজিস্ট্রেশন নম্বর চট্ট-মেট্রো-ঘ-১১-৫৩৪৪। বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) সূত্রে জানা গেছে, গাড়িটি এস আলম গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান সোনালী লজিস্টিকসের নামে নিবন্ধিত। এটির রেজিস্ট্রেশনের সময় ঠিকানা উল্লেখ করা হয়েছে নগরের আসাদগঞ্জ এলাকার এস আলম গ্রুপের মালিকানাধীন একটি ভবনের।
ঘটনার বিষয়ে বিএনপি নেতা সভাপতি মঞ্জুরুল আলম চৌধুরী বলেন, এস আলমের গাড়িটি কে রেখেছে আমি জানি না। আমিও অন্য সবার মতো এই ভবনে থাকি।
পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, ওই ভবনে এস আলমের আরও দুটি গাড়ি ছিল। অভিযানের বিষয়ে আঁচ করতে পেরে সেগুলো দ্রুত সরিয়ে ফেলা হয়েছে।
গত ২৯ আগস্ট এস আলম গ্রুপের কর্ণধার সাইফুল আলম মাসুদের পরিবারের ব্যবহৃত ১৪টি বিলাসবহুল গাড়ি সরিয়ে নিতে সহায়তার অভিযোগ উঠে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির শীর্ষ নেতাদের মুখে। এটি নিয়ে ভিডিওসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। দেশব্যাপী তীব্র সমালোচনার মুখে বিএনপি ১ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ইউনিট বিলুপ্ত ঘোষণা করে।
এর আগে গত ২৮ আগস্ট এস আলমের মালিকানাধীন একটি বিলাসবহুল গাড়িতে চড়তে দেখা গেছে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদকে। মিতসুবিশির স্টেশন ওয়াগন ব্র্যান্ডের জিপে করে ওইদিন তিনি কক্সবাজার থেকে চকরিয়া-পেকুয়ায় যান। বহর নিয়ে সালাউদ্দিনের যাত্রার কয়েকটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে সংবাদ সম্মেলন করে ক্ষমা চান বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন।
গত ২৮ আগস্ট এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, এস আলম বিশ্বের ইতিহাসে প্রথম ব্যক্তি যিনি পরিকল্পিতভাবে ব্যাংক লুট করেছেন। এভাবে পৃথিবীতে কেউ ব্যাংক ডাকাতি করেছে কি না জানা নেই। এখন এস আলমের নামে–বেনামে থাকা সম্পদ বিক্রি করে আমানতকারীদের অর্থ ফেরত দেওয়া হবে। তাই এই মুহূর্তে এস আলমের সম্পদ যেন কেউ না কেনেন।